সারাদেশের ন্যায় নাটোরের লালপুরেও প্রতিবছর ঈদুল আজহার আগে বাজারে বিভিন্ন ধরনের মসলার বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় সুযোগ বুঝে মসলার দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এবারও গত এক সপ্তাহে লবঙ্গ, দারচিনি, কাবাব চিনি, বড় এলাচ সহ বেশ কয়েকটি মসলার দাম বেড়েছে।
লালপুরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, লালপুরের মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে পাশ্ববর্তী বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর মসলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা। গত এক সপ্তাহে মসলার দাম কিছুটা বাড়লেও গত বছরের চেয়ে এবার কিছু মসলার দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে।
বনপাড়া ও ঈশ্বরদীর পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে লবঙ্গের দাম কেজিতে প্রকারভেদে ৭০০-৯০০ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫০-১০০০ টাকা, দারচিনি কেজিতে ২৮০ থেকে বেড়ে ৩৪০ টাকা, কাবাব চিনি কেজিতে ২৪০০ থেকে বেড়ে ২৫০০ টাকা, বড় এলাচ কেজিতে ৬০০ থেকে বেড়ে ৭০০ টাকা, আলু বোখড়া কেজিতে ১শত টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৬শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জিরা প্রকারভেদে ২৬০-৩২০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়।
তবে কমেছে ছোট এলাচের দাম। প্রতি কেজিতে প্রায় দুইশত টাকা কমে প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ৩৪০০ টাকায়।
এদিকে উপজেলার লালপুর, গোপালপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি দামের থেকে কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বেশিতে খুচরা বিক্রি করছে দোকানিরা।
খুচরা মুদি দোকানি গোপালপুরের খলিল ষ্টোরের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বনপাড়া, ঈশ্বরদী থেকে মসলা কিনে নিয়ে আসি, যা দিয়ে কিনি তার থেকে হাজারে ৫০-৬০ টাকা লাভ করি। আর এবার গত ঈদ গুলোর চেয়ে কাস্টমারও অনেক কম। সামনে ঈদের বিক্রি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বনপাড়া বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী লুৎফর স্টোরের জনি ও আরেক ব্যবসায়ী সঞ্জয় জানান, গরমমসলার দাম এখন পর্যন্ত গত বছরের থেকে কিছুটা কম। তবে মাঝে মধ্যে মসলার দাম কিছুটা কমবেশি হয়। তারাও বগুড়া ও পাবনা থেকে আরেক পাইকারদের কাছে থেকে মসলা নিয়ে আসেন এবং সামন্যকিছু লাভে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। তবে গত বছরের তুলনায় মসলার চাহিদাও কিছুটা কম বলে জানান তারা।
তবে ক্রেতারা জানান, একদিকে করোনার পরিস্থিতি আর্থিক সংকটে রয়েছেন। আবার দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি। সব মিলিয়ে বিপাকে রয়েছেন তারা। তেমনি একজন শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনায় এমনিতেই হাতের অবস্থা খারাপ। সামনে আবার বছরের একটা দিন। কি যে করব! নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের দাম বাড়তি। দ্রব্য মূল্যের উধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।