নাটোর এনএস সরকারী কলেজের বিদায় অনুষ্ঠানের র্যাগডে’র নামে বেলেল্লাপনার অভিযোগ উঠেছে। অনুষ্ঠানে ডিজে পার্টি এনে প্রকাশ্যে অশোভন ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করার ভিডিও চিত্র সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ফুঁসে উঠছে এলাকার মানুষ। এঘটনায় খোদ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। এই র্যাগডে’র নামে ডিজে পাটির অশোভন নৃত্যের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ডিজে পার্টি উদযাপনে সহায়তার অভিযোগে কলেজের পাঁচ শিক্ষককে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। আজ রোববারের মধ্যে ওই ৫ শিক্ষককে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের যে কয়েকজন নেতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে জেলা ছাত্রলীগ। গত ২৯ জুলাই শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ‘স্বপ্নচারী-২০২২’ শিরোনামে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে অনুষ্ঠিত ডিজে পার্টি উদযাপন করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগডে’র নামে ডিজে পার্টি, উদ্দাম নৃত্য, বুলিং, অশ্লীলতা ও নগ্নতাসহ সব অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এমন সুস্পষ্ট নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রথম বারের মতো নাটোর জেলার কোন বিদ্যাপীঠে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে ডিজে পার্টি অনুষ্ঠানের নামে বেলেল্লাপনা করা হলো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগডে’র নামে ডিজে পার্টি, উদ্দাম নৃত্য, বুলিং, অশ্লীলতা ও নগ্নতাসহ সব অপসংস্কৃতি বন্ধ করা সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছে এলাকার মানুষ।
পাবলিক পরীক্ষা শুরুর পূর্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক বিদায়ের আবেগঘন একটি দিনে অনুষ্ঠিত হতো বিদায় অনুষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা তাদের ভুলত্রুটি মাফ করে ভবিষ্যত শিক্ষা ও কর্মজীবনের জন্য দোয়া নিতেন শিক্ষকদের থেকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন পরীক্ষার্থী ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান মানে এমনই চিরাচরিত দৃশ্যপট। তবে নাটোরের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারি কলেজের ঐতিহ্য মাড়িয়ে ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কয়েকজন বিদায় অনুষ্ঠানের নামে অনুমতি নিয়ে ক্যাম্পাসে ডিস্কো জকি(ডিজে) এনে রেক ডে উদযাপন করেছেন। পরীক্ষার্থীদের টি-শার্টে অনুভূতি ব্যক্ত করার নামে যৌন উত্তেজক অশালীন শব্দ লিখতে দেখা গেছে। পুরো আয়োজনে তাদের সহযোগিতা করেছেন কলেজের কয়েকজন শিক্ষক এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। অথচ কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগডে’র নামে ডিজে পার্টি, উদ্দাম নৃত্য, বুলিং, অশ্লীলতা ও নগ্নতাসহ সব অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এমন সুস্পষ্ট নির্দেশনাকে বৃদ্ধ্গাুলি দেখিয়ে প্রথম বারের মতো নাটোর জেলার কোন বিদ্যাপীঠে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে ডিজে পার্টি অনুষ্ঠিত হলো।
এদিকে এন এস সরকারি কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে র্যাগডে ও ডিজে পার্টির ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সুধীজনরা এমন আয়োজনের অনুমতি দেয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডিজে পার্টির সমালোচনাকারীদের প্রত্যুত্তরে আক্রমণাতœক মন্তব্য করছেন শুক্রবার র্যাগডে ও ডিজে পার্টিতে অংশ নেয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী। সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করার হুমকিও দিয়েছেন কয়েকজন ছাত্রী পরীক্ষার্থী।
এ বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, র্যাগডে ও ডিজে পার্টিতে অংশ নেয়া কয়েকজন পরীক্ষার্থী, কলেজের কর্মচারি, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কলেজ প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মন্তব্য পর্যালোচনা করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কমবেশি মিলিয়ে চলতি বছর কলেজ থেকে এক হাজার একশ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। এদের মধ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী গত এপ্রিলে অশ্লীলতার ঘটনায় আলোচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগডে’র অনুসরণে ডিজে পার্টির পরিকল্পনা করে। বিষয়টি তারা কলেজের কয়েকজন তরুণ শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে। ওই শিক্ষকরা এ বিষয়ে আগ্রহ দেখালে ছাত্র-ছাত্রীরা অন্যদের সংগঠিত করার কাজ শুরু করে। তবে শুরু থেকেই মেধাবী ও সাধারণ পরীক্ষার্থীদের থেকে তারা র্যাগডে পালনে কোনো সাড়া পায়নি। তখন তারা নিজেরাই নিজেদের অংশগ্রহণে দিনটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। কলেজ শাখা ছাত্রলীগকে অবহিত করে তারা অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করে ও মাথাপিছু চাঁদা সংগ্রহ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে একজন নারী ডিস্কো জকিকে(ডিজে) ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বগুড়া থেকে ভাড়া করে আনে অনুষ্ঠানের জন্য।
২৯ জুলাই শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কলেজ চত্বরের মুক্তমঞ্চে র্যাগডে ও ডিজে পার্টি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন অনধিক ১০০ শিক্ষার্থীর সাথে রাজশাজী, পাবনা ও নাটোরের অনান্য কলেজ থেকে আরো শতাধিক বহিরাগত ডিজে পার্টিতে অংশগ্রহণ করে। এর আগে কলেজের একটি কক্ষ ব্যবহার করে তারা নাচের রিহার্সাল করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে র্যাগডে ও ডিজে পার্টির সমালোচনা করেছেন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
এনএস সরকারি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মহসিন মিনু বলেন, আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান এন এস কলেজে র্যাগডে’র নামে যে অপসংস্কৃতি ও অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনার ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে তার তীব্র নিন্দা সহ প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করেছেন সকল সাবেক ও বর্তমানের সন্মানিত স্বনামধন্য গর্বিত শিক্ষার্থী সহ নাটোরের গর্বিত সকল বাক্তিবর্গের প্রতি আহবান এর জোড়ালো প্রতিবাদ জানানোর জন্য। বর্তমান কলেজ প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি এর দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ও সুব্যাবস্থা নেয়ার জন্য।
নাজমুল নামে স্থানীয় এলাকবাসী জানান, বিদায় অনুষ্ঠানের নামে ছাত্র-ছাত্রী পরস্পর পরিহিত টিশার্টে লেখালেখি, ভাড়া করে আনা ডিজের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে উদ্দ্যম নাচ কখনোই সভ্যতার অংশ হতে পারে না। এ নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে ফেসবুকে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য ও হুমকির শিকার হয়েছি। কেউ কেউ নিজের প্রাইভেসি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করারও হুমকি দিয়েছে। এসব উশৃংখলদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবার আহ্বান জানাই।
কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বুলবুল আহমেদ বলেন, আমরা হতবাক হয়েছি পরীক্ষার্থী নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেমেয়েদের কর্মকান্ড দেখে। এই উশৃঙ্খলতায় সকল পরীক্ষার্থী অংশ নেয়নি। কাজেই সবাইকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না। কলেজের অধ্যক্ষ এই উশৃংখলতার অনুমতি দিয়েছেন। যারা এ ধরনের অনুষ্ঠানে উৎসাহ যুগিয়েছেন, তাদের শাস্তি দাবী করছি। সেই সাথে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে ভবিষ্যতে যেন কলেজে ডিজে পার্টি না হয় তা নিশ্চিতের দাবী জানাচ্ছি।
সাজ্জাদ হোসেন নামে ফেসবুকে সমালোচনাকারীদের একজন বলেন, আমার শহরের সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কয়েকজন উশৃংখল ছাত্রছাত্রীর কর্মকান্ড নিয়ে সমালোচনা করার অধিকার রাখি। বাক স্বাধীনতার অধিকার রাষ্ট্র আমাকে দিয়েছে। অথচ তাদের প্রচ্ছন্ন হুমকির শিকার হয়েছি। তাদের রিহার্সাল, অশালীন অঙ্গভঙ্গি, পরস্পরের গায়ে লেখা বলার অযোগ্য শব্দ ইত্যাদির বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুকেই ছড়িয়েছে যা অনেকেই দেখেছে এবং শেয়ার করেছে। অথচ তাদের মধ্যে আমার মতো যারা সমালোচনা করেছে, তারাই ঔদ্ধত্য আচরণের শিকার হয়েছে। এদের পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহীন বলেন, কলেজ কমিটির দুএকজন ছাত্রলীগ নেতা ডিজে পার্টিসহ র্যাগডে আয়োজনে সহায়তা করেছেন এবং উপস্থিত থেকেছেন। ছাত্রলীগ কখনো উগ্র ও সংস্কৃতি পরিপন্থী আয়োজন সমর্থন করে না। তাই যারা এ কাজে সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে জড়িত ছিলো তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ দিঘাপতিয়া এম কে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিদায় অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে র্যাগ ডে ও ডিজে পার্টির আয়োজন কলেজটির অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। বিনয়ী বিদায়ের পরিবর্তে এমন উগ্র আয়োজন আমাদের সংস্কৃতির সাথে যায় না। আমি মনে করি কোনো অভিভাবক এমন অপসংস্কৃতি চেতনায় লালন করেন না। এটাই যেনো প্রথম ও শেষ আয়োজন হয় তা কঠোরভাবে নিশ্চিতের আহ্বান জানাই। আগামী ভবিষ্যতের অবক্ষয় রোধে এই অপসংস্কৃতির পরিবর্তে বাংলা সংস্কৃতির চর্চা নিজেদের নিয়োজিত করি।
এদিকে র্যাগডে ও ডিজে পার্টি নিয়ে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীরা ও সমমনারা তাদের যুক্তি তুলে ধরেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তাদের দাবী তাদের কর্মসূচি সম্বন্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত।
এক ছাত্রী রাজশাহীর এক কলেজের র্যাগডে’র ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘যদি পাশের শহরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এতো আগাতে পারে তবে আমরা পিছিয়ে থাকবো কেন? পড়াশোনা হবে পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও এগিয়ে যাবো আমরা।’
ফাইরাজ আনিকা নামে এক ছাত্রী দাবী করেছেন সমস্ত আয়োজন কলেজ প্রশাসনের তত্বাবধানে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা কোনোরুপ বিশৃঙ্খলা দেখেননি দাবী করে তিনি লিখেন, সবাই মিলে আনন্দ করা দোষের কিছু না।
আরহাম আপন নামে এক পরীক্ষার্থী লিখেছেন, ডিজে পার্টির ও র্যাগ ডে’র অনুষ্ঠানে কলেজের অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম সরাসরি উপস্থিত না থাকলেও তাদের জন্য ফোন করে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি সেই বার্তায় উৎসাহমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
র্যাগ ডে’র অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়া অন্তত ১০ জন পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিছু পরীক্ষার্থীর বাড়াবাড়ির কারনে অনুষ্ঠানে অংশ না নিয়েও সমালোচনার শিকার হতে হচ্ছে। একদিকে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীরা নিজেদের আপডেট দাবী করে তাদের ব্যাকডেটেড বলছে। অপরদিকে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নিয়েও প্রশ্নবিদ্ধ হতে হচ্ছে।
নাটোর জজকোর্টর আইনজীবী এডভোকেট শহীদ মাহমুদ মিঠু বলেন, একটি রিটের জবাবে উচ্চ আদালত প্রদত্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগ ডে’ র নামে সব ধরনের বেলাল্লাপনা বন্ধের ব্যাপারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা দেয়া আছে। কলেজ প্রশাসন ও র্যাগ ডে পালনকারীরা উচ্চ আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। বিষয়টি উচ্চ আদালতের দৃষ্টিতে এলে পৃষ্ঠপোষক ও অংশগ্রহনকারীরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডিজে পার্টির ও র্যাগ ডে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ব্যপারে শুক্রবারর কলেজ অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সবাই নয়, কিছু শিক্ষার্থী বিদায় অনুষ্ঠান করার আবেদন নিয়ে আসে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে অনুমতি দিই। তবে তাদের তত্বাবধানের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই শিক্ষকরা চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন। যার ফলে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে পরীক্ষার্থীরা র্যাগডে ও ডিজে পার্টি করার উৎসাহ পেয়েছে। কমিটির সেসব শিক্ষকদের সকলকে শোকজ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তত্বাবধানে থাকা শিক্ষকরা যদি নারী ডিজে ভাড়া করে ডিজে পার্টির কথা আমাকে জানাতেন তবে তখনই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতাম। এমন উশৃংখলতাকে আমি কখনোই প্রশ্রয় দিই না।’
পরীক্ষার্থীদের দ্বারা সমালোচনাকারীদের হুমকি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের ব্যাপারে অধ্যক্ষ বলেন,’ ফেসবুকে সমালোচনাকারীদের আমার প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার্থী কর্তৃক যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছ, বিশেষত আমি যেসব মন্তব্যগুলো দেখেছি, সেগুলো আমাকে হতবাক করেছে। তারা সমালোচনাকারীদের সাথে ভালো ভাষায় কথা বলতে পারতো।’ ‘ভবিষ্যতে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে বিতর্কিত কোন কাজ করতে দেয়া হবে না কলেজে। যেসব পরীক্ষার্থী এবার এ ধরনের কাজ করেছে, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যায় কি না, তা আমরা ভেবে দেখবো।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কলেজের র্যাগডে বা ডিজে পার্টির ভিডিও চিত্র দেখেছেন তিনি। যা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। এই অপসংস্কৃতি থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।