নাটোরের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর থেকে আজ শনিবার আবারও একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান (অটোভ্যান) চুরি হয়েছে। ভ্যানটির মালিক ষাটোর্ধ্ব তাছের মণ্ডল। আজ সকাল ১০টার দিকে ভ্যানটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের পাশে রেখে অসুস্থ নাতিকে দেখতে কিছু সময়ের জন্য হাসপাতালের ভেতরে ঢোকেন তিনি। ফিরে এসে দেখেন, ভ্যানটি চুরি হয়ে গেছে। উপার্জনের একমাত্র সম্বল ভ্যানটি হারিয়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করা ও সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এই বৃদ্ধ।
তাছের মণ্ডলের বাড়ি লালপুর উপজেলার এবি ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে। তাছের মণ্ডল বলেন, ভ্যানটি যখন তিনি হাসপাতালের ফটকের পাশে রাখা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন, তখন এক যুবক তাঁকে আশ্বস্ত করেন তাঁর ভ্যান চুরি হবে না। ওই যুবক এ-ও বলেন, হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। যুবকের কথা বিশ্বাস করে তিনি ভ্যান রেখে হাসপাতালের ভেতরে যান। প্রায় আধা ঘণ্টা পর বের হয়ে এসে দেখেন, তাঁর ভ্যানটি চুরি হয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তিনি ওই যুবককেও সেখানে পাননি।
এ ঘটনার পর হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানা যায়, যে যুবক ভ্যানচালককে ভ্যান রেখে যাওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছিলেন, তিনিই ভ্যানটি চুরি করে পালিয়েছেন। ক্যামেরায় এই দৃশ্য দেখে বৃদ্ধ ভ্যানচালক কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঘটনাস্থলের পাশেই লালপুর থানা। তিনি পুলিশকেও বিষয়টি জানান। তবে এখন পর্যন্ত ভ্যানটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তাছের মণ্ডল জানান, তাঁর পাঁচ মেয়ে। ভ্যান চালিয়ে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এর আগেও তাঁর একটি ভ্যান চুরি হয়ে যায়। পরে ৫ হাজার ৪০০ টাকা কিস্তিতে ৭৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এই ভ্যান কিনেছিলেন। এখন ভ্যান হারিয়ে তিনি কিস্তির টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন এবং স্ত্রী-মেয়ের মুখের খাবার কীভাবে জোগাড় করবেন, তার কোনো পথ দেখছেন না।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে এম শাহাবুদ্দিন জানান, পুরো হাসপাতাল চত্বর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আছে। তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। ফটকে প্রহরী নিয়োগ না থাকায় চোর ধরা সম্ভব হয়নি।