নাটোরের লালপুরের সেই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সরকারি বাসভবন থেকে ২৮০ বস্তা গম উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই কর্মকর্তা বাগাতিপাড়া থানায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রোকুনুজ্জান রোকন ও তার ২ সহযোগীর বিরুদ্ধে তাকে স্থানীয় এমপির বাসভবনে ডেকে নিয়ে লাঞ্ছিত করার মামলা করে আলোচনায় আসেন। ঘটনাটি জেলা জুড়ে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনায় রোকনের দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই মামলা দায়েরের কয়েক ঘন্টার মধ্যে সেই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনের পাশের একটি বাসা থেকে ২০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করা হয়। এই সরকারি গম উদ্ধারের পর তাকে নিয়ে আবারও আলোচনার ঝড় ওঠেছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে জানা যায়, লালপুর সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ২৮০ বস্তা সরকারি গম নিরাপত্তা রক্ষীর বাসায় রেখেছেন এমন খবর পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরে সেখানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। গম উদ্ধারের পর তা আবারও গুদামজাত করা হয়েছে।’
এসময় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন,’গম সংগ্রহের দিন গুদামে জায়গার স্বল্পতার কারণে জেলা খাদ্য কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে গমগুলো গুদাম বাউন্ডারির ভিতরে নিরাপত্তা রক্ষী তানভীরের কোয়াটারের পাশের রুমের ফাঁকা জায়গায় আমার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি হয়নি।’
তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাটোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবিন্দ্র লাল চাকমা বলেন, ‘গম বাসায় রাখার ব্যাপারে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি গুদামে জায়গার স্বল্পতার বিষয়টিও সঠিক নয় ।
তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করার জন্য লালপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকতাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রফিকুল ইসলামকে স্থানীয় এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের বাড়িতে ডেকে নিয়ে ৪ ঘণ্টা আটক রেখে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ আসে।
রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন ও তার দুই সহযোগী এমপির বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর করে দলিলে ৮ লাখ টাকা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে সই নেন। পরে বাগাতিপাড়া থানায় রফিকুল মামলা দায়ের করলে রোকনের দুই সহযোগী রাসেল আহমেদ ও আবুল কালাম আজাদকে আটক করে ডিবি পুলিশ।