রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত শাহদৌলা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত বিদায়ী অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পৃথক দুটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ দাখিল করা হয়।
দায়েরকৃত অভিযোগের একটিতে ভুক্তভুগীদের পক্ষে পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক মতিউর রহমান ও বাংলা বিষয়ের প্রভাষক শরিফুল ইসলাম জানান, এই কলেজটি সরকারি করণে তারিকা ভুক্ত হওয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণ প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে ১২ জন সমস্যা সম্বলিত শিক্ষক-কর্মচারীর নাম বাদ রেখে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ৫৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকা জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ঐ মন্ত্রণালয় আরো ৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সমস্যা চিহৃত করে মোট ৪৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নামের তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়।
বাদ পড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের সমস্যা উত্তরণের মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেন। এ ছাড়াও সরকারিকরণ কার্যক্রমকে গতিশীল করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে সকল শিক্ষক কর্মচারীর নিকট থেকে অর্থ আদায় করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার জাতীয় করণ বাধাগ্রস্থ করবেন মর্মে ভয় দেখিয়ে টাকা দিতে বাধ্য করেন। অথচ এ সমস্ত অর্থ(টাকা) এখন পর্যন্ত কোন কাজে লাগেনি এবং বাদ পড়া ২১ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সমস্যা সমাধান হয়নি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে ভুক্তভুগী শিক্ষক-কর্মচারীরা ঐ অধ্যাক্ষের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন।
অপর একটি অভিযোগে ঐ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিভাগের প্রভাষক মো: সালাউদ্দিন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে আর্থিক, একাডেমিক এবং প্রশাসনিক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে , বিদায়ী অধ্যক্ষ বিভিন্ন শ্রেনীতে ভর্তি ও ফরম পূরণ, কল্যান ও দরিদ্র তহবিল ফ্রি , ম্যাগাজিন ফি ,অনার্স শিক্ষার্থীদের নিকট হতে সেমিনার ফ্রিস এবং বিভিন্ন দিবস উৎযাপন সহ মোট ২৩ টি খাতে নানা অনিয়ম দুর্ণীতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যার হিসেব তিনি ছাড়া আর কেউ রাখেন না।
এই অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, অ্যালাই ফান্ড নামক ফান্ড পূর্বে অজানা বা কলেজে না থাকলেও অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক এটি শুরু করেছেন। উক্ত ফান্ডের কোন বৈধতা আছে বলে আমাদের জানা নেই। অথচ প্রতিটি পরীক্ষা এবং অন্যান্য সম্মানী বিলের সাথে অ্যালাই ফান্ডের টাকা প্রদান করতে হয়। অপরদিকে শিক্ষার্থীরা কলেজ হতে তাদের মূল মার্কসিট কিংবা সার্টিফিকেট নিতে আসলে কোন রশিদ-ভাউছার ছাড়া ৫ শ’ টাকা থেকে শুরু করে উর্ধ্বে যত বেশি নিতে পারেন।
এ ছাড়াও তিনি দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে প্রজেক্টর ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যব হতে সরকারি ল্যাপটব চুরি হয়। অথচ এ বিষয়ে অধ্যাবধি থানায় একটি জিডিও করা হয়নি। আবেদন কারিগণ উপরোক্ত বিষয় গুলোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা বলেন, পৃথক দুটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। তবে বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোজ্জামেল হকে বলেন, আমি কোন শিক্ষক কর্মচারীর নিকট থেকে টাকা নেইনি। একাডেমিক এবং প্রশাসনিক অনিয়ম-দুর্ণীতির প্রশ্নই উঠেনা। আমার মেয়াদ কাল শেষ হওয়ার পর কতিপয় শিক্ষক জনৈক এক শিক্ষককে দায়িত্ব হস্তান্তর করার কথা বলেন। নিয়ম মাফিক ঐ শিক্ষক দায়িত্ব পান না। তাই আমি এতে অপরগতা প্রকাশ করি। এ জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে দুরভি সন্ধি মূলক মিথ্যাচার করে অভিযোগ আনছে। আমি এসব অভিযোগ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি।