নাটোরের লালপুর উপজেলার বিভিন্নস্থানে বেড়েছে শিয়াল আতংক। শেয়ালের কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার খবর মিলছে চারিদিকে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই উপজেলায় অনন্ত নারী ও শিশুসহ ৮ ব্যক্তি শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় অন্তত ৫টি শেয়াল পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, রাতে চারিদিকে শিয়ালের ব্যাপক হাকঁ-ডাঁক ভেসে আসলেও সন্ধ্যা ও ভোরবেলায় পথের উপরে শিয়ালের বেশ আনাগোনা চোখে পড়ে। কিন্তু এখন দিনেদুপুরে বিক্ষিপ্ত হয়ে শিয়ালগুলো স্থানীয় নারী-শিশু, পথচারী এবং গরু-ছাগল কামড়ে আহত করছে। এতে করে উপজেলার দাইড়পাড়া, দিলালপুর, রায়পুর, ফুলবাড়ি, বিজয়পুরসহ তার আশেপাশের এলাকার মানুষ শিয়াল আতংকে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী উপজেলার দাইড়পাড়া গ্রামের জীবনা খাতুন জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পান্তাপাড়া বিলে তার স্বামীকে খাবার দিতে যান। ফেরার পথে গোপালপুর-আব্দুলপুর সড়কের কাছে আসতেই শিয়াল এসে তাকে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে দুই পথচারী এগিয়ে এলে তাদেরও কামড় দিয়ে শিয়ালটি পালিয়ে যায়।
দিলালপুরের মিরাজুল ইসলাম, ফুলবাড়ির রোকনুজ্জামান, বিজয়পুরের সাগর জানান, গত চারদিনে শিয়াল স্থানীয় অনন্ত ৮জনের ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় আত্মরক্ষার্থে স্থানীয়রা অন্তত ৫টি শিয়াল পিটিয়ে হত্যা করে। তারা জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে প্রতিকার চাইলেও এবিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা শিয়ালের কামড়ে আতংকিত হয়ে রাস্তাঘাটে লাঠি নিয়ে চলাচল করছে। কিন্তু শিয়ালের উৎপাত থেকে গ্রামের মানুষদের রক্ষায় সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা, বন কর্মকতা ও বিভাগীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকতা দায় চাপলেন একে অন্যের ঘাড়ে।
লালপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুমারী খাতুন বলেন, বন্যপ্রাণী নিয়ে আমাদের কোন কাজ নাই। এটা বন কর্মকতার সাথে কথা বলতে হবে।
জেলা সহকারী বন সংরক্ষক কার্যালয়ের উপজেলা বন কর্মকতা এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের বন বিভাগের আরেকটা আলাদা বিভাগ আছে বন্যপ্রাণী বিভাগ। এটা রাজশাহীতে আছে। বিষয়টা তারাই দেখবে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের এখান থেকে জনবল সংকট থাকায় সবকিছু কভার করা সম্ভব হয় না। শিয়ালে আতংকিতের বিষয় গুলা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা বা জেলা বন বিভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। বিষয়টা শুধু বন্যপ্রাণী দেখবে তা নয়।উপজেলা প্রাণী সম্পদের প্রাণী কল্যাণ আইন আছে, ধারা আছে। উনাদেরও দায়িত্বের মধ্যে পড় এগুলা।