স্টাফ রিপোর্টার: লালপুর উপজেলায় চরজাজিরা, রামকৃষ্ণপুর, বাকনাই, মোহরকয়া ও নওসারা সুলতানপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে এস্কেবেটর মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজ চলছে। গত প্রায় এক মাস ধরে এ বালু উত্তোলন ও বিক্রির কাজ চলছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শুরু হয়, পুরো রাত বালু উত্তোলন ও সরবরাহের কাজ চলে। তবে প্রশাসন এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দাবি, প্রতিরাতে ১০ চাকার ট্রাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বালু। লালপুর উপজেলা পরিষদের সামনে দিয়ে প্রতি রাতে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ গাড়ি বালু যায় পাশের বড়াইগ্রামে নির্মাণাধীন বনপাড়া পল্লী বিদ্যুতের ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে। সারা রাত বিকট শব্দ করে বালুবাহী ট্রাক চলাচল করে। বালু বোঝাই গাড়ির কারণে উপজেলার প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ইউএনওসহ স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নিজাম বলেন, লালপুর উপজেলার হল মোড় থেকে মাত্র তিন-চার কিলোমিটার দক্ষিণে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন এলাকা। এরপাশে পানি শূন্য পদ্মা নদী থেকে এস্কেবেটর (ভেকু) দিয়ে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয়ভাবে এক্সেবেটর দিয়ে বালু-ভরাট উত্তোলন করা হয়
যোগাযোগ করা হলে বালু ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মামুন দাবি করেন, বালু উত্তোলনের অফিসিয়াল অনুমতি আছে। সার্ভেয়ার দিয়ে জায়গা নির্ধারণও করা আছে।
তবে বালু উত্তোলনের অনুমতি ও জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন লালপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম্মী আক্তার। তিনি বলেন, কাউকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভূমিদস্যু ও বালু ব্যাবসায়ীরা। অথচ হুমকির মধ্যে পড়ছে পদ্মানদী, স্থানীয় রাস্তা-ঘাট, বাড়ি আর সর্বোপরি অধিবাসীরা। অথচ বার বার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। এছাড়া ওই বালু উত্তোলনের ফলে অর্থনৈতিক জোন এলাকার জমি, কলনীতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্ধ শতাধিক বাড়ি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, লালপুর থানা, লালপুর সদর বাজার, নদী রক্ষা বাঁধসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতি রোধে বালু উত্তোলন বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।