নাটোরের ছেলে উদীয়মান তরুন চলচিত্র পরিচালক রায়হান শশীর ‘ডেজা ভ্যু’ ফ্রান্সের বিশ্ব কান চলচিত্র উৎসবের সপ্তম বিভাগে বেষ্ট ফিলোসফিক্যাল ফিল্মপুরষ্কার জিতেছে। এছাড়া জাপান-ইন্ডিয়া আয়োজিত হোয়াইট ইউনিকর্ন ফিল্মফেস্টিভ্যাল এর স্পেশাল জুরিএওয়ার্ড, একইভাবে স্পেশাল জুরিএওয়ার্ড পেয়েছে স্পেনের এলগ্রিত দি লস সিন ভয় চলচিত্র উৎসব থেকে।
তিন ভাগ জল আর একভাগ স্থলের এই পৃথিবীতে যদি সমুদ্র প্রতিশোধ নেয় তাহলে আমরা কি করবো বা কোথায় যাবো। এরকমই একটা প্রেক্ষাপট নিয়েই তৈরি করা হয়েছে ‘ডেজাভ্যু’ চলচিত্রটি। পরিচালকের মতে ডেজাভ্যু চলচিত্রের প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়গুলোর অন্যতম হলো-‘নারী ভোগ দখল করার জন্য নয়। নারী, পুরুষের চেয়েও বেশি একজন মানুষ।
ডেজাভ্যু’ ১২ তম দাদা সাহেব ফালকে-২০২২ চলচিত্র উৎসবে অনারেবল জুরি মেনসন্ড এওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছে। বিশেষ আমন্ত্রনে ছবির পরিচালক রায়হান শশী ও প্রযোজক ফারাহনাজ আলম অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে চলতি মাসে দিল্লি যাচ্ছেন।
ইংল্যান্ডের অফিসিয়াল সিলেকশান পেয়েছে লিফট অফ গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ফিল্ম ফেস্টিভাল, ফার্স্ট টাইম ফিল্ম মেকার সিজন, ফোর্থ স্ক্রিন অনলাইন ফিল্ম এওয়ার্ড চলচিত্র উৎসবগুলো থেকে। চলচিত্র নির্মাতাদের কাছে ইন্ডিয়ার দাদা সাহেব ফালকে এওয়ার্ড একটা সম্মানজনক ব্যাপার।
এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ৭ টি চলচিত্র উৎসবের চিহ্ন লেগেছে ডেজাভ্যু পোস্টারে। ‘ডেজাভ্যু’ প্রযোজনা করেছেন ফারাহনাজ আলম এবং গল্প,সংলাপ,চিত্রনাট্য,পরিচালনা ও সম্পাদনা করেছেন রায়হান শশী। চিত্র গ্রাহক সাঈদ মুস্তাকিম অনিক, প্রোডাকশন ডিজাইন করেছেন হাসান অয়ন এবং সহযোগী পরিচালক তন্ময় সুর্য্য।
ডেজাভ্যু’ নির্মান করেছে উড়ুপট্রপ প্রোডাকশন। এই সিনেমায় নাটোরের আরো দুই জন অভিনয় করেছেন। তারা হলেন মেহজাবিন মুন ও তামিম তপু। নায়িকা চরিত্র মুক্তার ভূমিকায় সুমাইয়া মেহজাবিন মুন ও জীবনের ভুমিকায় তামিম তপু অভিনয় করেছেন। এছাড়া নরসিংদির ইমরান হোসেন বিবেকের ভুমিকায় অসাধারন অভিনয় করেছেন।
নাটোরের অপর কৃতি সন্তান ‘ডেজাভ্যু’ ছবির পরিচালক রায়হান শশী বলেন, ‘এই চলচিত্রে বিবেকের ভূমিকায় অসাধারন অভিনয় করছেন ইমরান হোসেন। জীবনের ভুমিকায় তামিম তপু, ইমরানকে দেখা যাবে অজানা এক দ্বীপে থিতু হওয়া জীবনের আলোর দিশারী হয়ে আবির্ভাব হতে।
চমৎকার গলায় বিবেকের জীবনমুখী গান আর জীবনের মুল্যবোধ নিয়ে জীবনের সাথে কথপোকথন দর্শককে বিমোহিত করবে।’ তিনি মনে করেন, ইমরান সেরা যন্ত্রসংগীত এর চেয়েও বেশি সেরা অভিনেতার পুরস্কার পাবার যোগ্যতা রাখে।
এদিকে রায়হান শশীর এই সাফল্যে উচ্ছসিত তার পরিবার। এক সময় ঢাকার চলচিত্র আঙ্গিনায় শশীর পিতা নাটোর শহরের বড়গাছা এলাকার বাসিন্দা জাতীয় পার্টির নেতা মঞ্জুরুল মোর্শেদ লুলুরও পদচারনা ছিল।
নাটোরের তিন বন্ধু মঞ্জুরুল মোর্শেদ লুলু, প্রয়াত এসএম সিরাজুল ইসলাম মজনু এবং এনামুল আলম মুরাদের যৌথ প্রজোযনায় ‘ন্যায়যুদ্ধ’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পায়। বাবার পথ ধরেই চলচিত্র অঙ্গনে ঝুকে পড়েন রায়হান শশী।
মঞ্জুরুল মের্শেদ লুলু ছেলের সাফল্যে উচ্ছসিত হয়ে বলেন, চলচিত্র তৈরির মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত চেয়েছিলেন একসময়। কিন্তু তিনি না পারলেও তার মেজো ছেলে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করায় খুব খুশী। তার ছেলে রায়হান শশীর পরিচালনায় তৈরি সিনেমাটি কানের মত এত বড় একটি উৎসবে সম্মানিত হওয়ায় খুব ভালো লাগছে।’
ইতিহাস ঐতিহ্যের নাটোরে আরো একটি ইতিহাস যুক্ত হয়েছে তার ছেলে রায়হান শশীসহ নাটোরের এই তিন কৃতি সন্তানের অর্জনের মাধ্যমে। তিনি তার ছেলে রায়হান শশীর আরো সফলতা কামনায় সকলের দোয়া চেয়েছেন।