নাটোরের লালপুরে ফুল চাষের জন্য বেশ পরিচিত নবীনগর গ্রাম। এখানকার ষাটোর্ধ জাফর আলী। দীর্ঘ এক যুগ ধরে ফুল চাষ করে সংসার চলে তার। শুধু তিনিই নন তার মত গ্রামের আরো কয়েকশ পরিবার এই ফুল চাষ ও ফুল ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। তবে গত দুই দিন যাবৎ ফুল নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রাত কাটছে তাদের। তাই ফুলের নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী।
বুধবার (২৪ মে) দুপুরে লালপুর -ঈশ্বরদী সড়কের নবীনগর এলাকায় ও উপজেলা পরিষদের সামনে ফুল ফেলে দিয়ে একর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় জাফর আলী বলেন, নবীনগর এলাকার একটি জমিতে গত তিন বছর আগে পুকুর খনন করায় ওই এলাকার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর ফলে ক্ষতির মধ্যে পড়েছে এলাকার কৃষকরা। ওই এলাকায় পুনরায় আরেকটি পুকুর খননের চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর বাঁধার মুখে পুকুর খনন বন্ধ হয়ে যায়। পরে দূর্বত্তরা ভেকুতে আগুন দেয়। এর জেরে ভেকু ব্যবসায়ীরা গতকাল জমি থেকে ফুল তুলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সিএনজিতে করে লালপুর বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে হল মার্কেটের সামনে সিএনজিসহ ফুল আটকিয়ে রাখে। পরে পুলিশের সহায়তায় তারা গাড়ি ছেড়ে দেয়। ততক্ষণে ফুলের মুকামে গাড়ি চলে যাওয়া ফুল আর ঢাকা পাঠানো যায় নি। এতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ফুল নষ্ট হয়ে গেছে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, এগ্রামে প্রায় প্রত্যেক নারী এই ফুলের জন্য আত্মনির্ভরশীল। ভোর থেকে সারাদিন পরিশ্রম করে ফুল দিয়ে মালা তৈরি করি। সেই ফুল যদি বাজারে বিক্রি করতে না পারি তাহলে খাবো কি? আমরা এমন অরাজকতা চাই না। এর সুষ্ঠ সুরহা চাই।
বিষয়টি অস্বীকার করে ভেকু ব্যবসায়ী উজ্জল হোসেন বলেন, পরিকল্পিত ভাবে এরা আমাদের থেকে ২লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় তারা ৪৫ লাখ টাকা মূল্যের ভেকু মেশিনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ উজ্জ্বল হোসেন বলেন, তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ফুলের গাড়ি বা অন্য কাউকে পাওয়া যায় নি। তারপরও অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, অবৈধ পুকুর খননের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ ও স্মারকলিপি পেয়েছি। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।