রাজশাহীর চারঘাট এলাকায় নিজেদের জমি বিক্রির জন্য বায়না নামা করে এক প্রতিবন্ধী ও তার পরিবার। কিন্তু প্রভাবশালী ক্রেতারা বায়নাকৃত টাকা পরিশোধ না করেই ওই জমির সাথে আরো জমি লিখে দিতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের দেয়া,টাকা পরিশোধের কথা বলে ওই প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে চেকের কয়েকটি পাতা নেন ওই জমির ক্রেতা আপন দুই ভাই। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ১ বছর পর আদালতে দুটি পৃথক চেক ডিজঅনার মামলা করে ওই দুই ভাই। ওই মামলার রায়ে এখন জেল খাটছেন ওই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। শুধু তাই নয়,ওই বায়না নামার বরাতে ১৭ লাখ টাকার দাবীতে আরো একটি মামলা চলমান। সবমিলিয়ে
জমি বিক্রি করতে বায়না নামায় স্বাক্ষর দিয়ে মাত্র ৬ লাখ টাকা নিয়ে এখন ৬৩ লাখ টাকার আসামী ওই প্রতিবন্ধী এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
অপরদিকে একমাত্র কর্মক্ষম ছেলে না থাকায় ক্ষুধার কষ্টে দিন যাপন করছেন অসহায় পরিবারটি।
ভুক্তভোগীদের দাবি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে ওই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে।
তবে ওই দাবি অস্বীকার করেছেন মামলার বাদিরা।
ভুক্তভোগী ওই প্রতিবন্ধীর নাম মহিদুল ইসলাম জীবন। তিনি চারঘাট এলাকার মোফাজ্জল হক ও নাজিরা বেগমের একমাত্র ছেলে।
অপরদিকে মামলার বাদী চারঘাট পরানপুর হাট এলাকার নবাব আলীর ছেলে মিষ্টি ব্যবসায়ী
মুসা হক ও তার ভাই ইসাহাক আলী।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মুসা হক রাজশাহী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২১ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করেন। মামলায় তিনি দাবি করেন, মহিদুল ইসলাম জীবন পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে ২১ লাখ টাকার ওই চেক দেন। ব্যাংকে নিয়ে গেলে তা ডিজঅনার করেন কর্তৃপক্ষ।
তিনি দাবী করেন,
তার সহজ সরল প্রতিবন্ধী ভাইয়ের বুদ্ধিও
কিছুটা কম। তাদের মাথার উপরে কোন অভিভাবক নেই। এই সুযোগে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে চেক নিয়ে মোট ৪৬ লাখ টাকা দাবীতে দুইটি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে।
ওই মামলায় এখন তার প্রতিবন্ধী ভাই জেল খাটছেন। শুধু তাই নয়,যে বায়না নামার সূত্র ধরে ওই ঘটনা,সেই বায়না নামার বরাতে ১৭ লাখ টাকা দাবীর আরো একটি মামলা চলমান। জমি বিক্রি করতে বায়না নামায় স্বাক্ষর দিয়ে মাত্র ৬ লাখ টাকা নিয়ে তার ভাই এখন ৬৩ লাখ টাকার আসামী।
তিনি আরো জানান,
তার ভাই না থাকার কারণে তাদের মা,বোন অসহায় জীবনযাপন করছেন।
অধিকতর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে তার ভাই ওই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পাবে। আর শাস্তি পাবে ওই মামলার বাদীরা এমন দাবী করে এব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ নিতে তিনি বিচারবিভাগ,পুলিশ,প্রশাসন,প্রতিবন্ধী ও মানবাধিকার সংগঠণ এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।
পরে ওই পাতায় ইচ্ছেমতো টাকা লিখে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
তিনি আরো দাবি করেন, জীবন কারাগারে থাকায় তার মা ও বোনেরা অসহায় জীবনযাপন করছেন। তার স্কুল পড়ুয়া একটা ছোট বোনের
পড়ার খরচ পর্যন্ত যোগাড় করতে পারছে না মা।
এ অবস্থায় বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে প্রতিবন্ধী জীবনের মুক্তির পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দায়ের করা ইসাহাক এবং মুসার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর আমজাদ হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে প্রতিবন্ধী জীবন জেলে যাওয়ার পর থেকে জীবনের পরিবার নিদারুন কষ্টে চলছে এমন দাবিও করেন তিনি।
চারঘাট পৌর মেয় একরামুল জানান, ওই জমির ব্যাপারে ৬-৭ লাখ টাকা জীবনরা নিয়েছে এমনটি তিনি শুনেছেন। জমি দিতে অস্বীকার করায় তার কাছ থেকে চেক নেওয়া হয়েছে এমন কথাও তিনি শুনেছেন। তবে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত শেষে
সত্য উদঘাটন করা জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
জীবনের বোন নাসরিন আক্তার দাবি করেন, তার ভাই যদি বায়না নামায় উল্লেখ করা টাকা পরিশোধের পর চেক দেয়, তাহলে চেক দেখিয়ে কেন এক বছর পর মামলা করা হলো?
তিনি আরো জানান,
তাদের সাড়ে ১২ শতক জমি বায়না করে ইসাহাক ও মুসা দুই ভাই মিলে। জমির দাম ২০ লাখ টাকা যা বায়না নামাতেও উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ২০ লাখ টাকার জমির জন্য তার ভাই কিভাবে ২৫ লাখ টাকার চেক একজনকে দিল? আবার বায়না নামা ছাড়াই কিভাবে অপর ভাইকে ২১লাখ টাকার চেক দিল?
তিনি দাবী করেন,
তার সহজ সরল প্রতিবন্ধী ভাইয়ের বুদ্ধিও
কিছুটা কম। তাদের মাথার উপরে কোন অভিভাবক নেই। এই সুযোগে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে চেক নিয়ে মোট ৪৬ লাখ টাকা দাবীতে দুইটি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে।
ওই মামলায় এখন তার প্রতিবন্ধী ভাই জেল খাটছেন। শুধু তাই নয়,যে বায়না নামার সূত্র ধরে ওই ঘটনা,সেই বায়না নামার বরাতে ১৭ লাখ টাকা দাবীর আরো একটি মামলা চলমান। জমি বিক্রি করতে বায়না নামায় স্বাক্ষর দিয়ে মাত্র ৬ লাখ টাকা নিয়ে তার ভাই এখন ৬৩ লাখ টাকার আসামী।
তিনি আরো জানান,
তার ভাই না থাকার কারণে তাদের মা,বোন অসহায় জীবনযাপন করছেন।
অধিকতর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে তার ভাই ওই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পাবে। আর শাস্তি পাবে ওই মামলার বাদীরা এমন দাবী করে এব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ নিতে তিনি বিচারবিভাগ,পুলিশ,প্রশাসন,প্রতিবন্ধী ও মানবাধিকার সংগঠণ এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।